“শ্রমিক-মালিক এক হয়ে গড়বো এদেশ নতুন করে” এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে ঢাকার কেরানীগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান মে দিবস।
১লা মে (বৃহস্পতিবার) সকালে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালিটি উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে শ্রমিক, মালিক, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসক রিনাত ফৌজিয়া। ঢাকা জেলার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারী উপ-মহাপরিদর্শক তামান্না মাহমুদের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ কাজল মিয়া, কেরানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আব্দুল গনি, আটি বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ও মালিক প্রতিনিধি হাজী হুমায়ুন কবীর, প্রেসক্লাবের সহ-সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. শামীম উদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক ইমরুল কায়েস, বিআরডিবির চেয়ারম্যান ওয়ালি উল্লাহ সেলিম, মো. নাজির প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া বলেন, “শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কই দেশের অগ্রগতির চাবিকাঠি। যারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন, তারা যেন কাজে ফাঁকি না দেন। পাঁচ মিনিটের ফাঁকি মানে কোটি কোটি কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়া। পাশের সাভারে আগস্টের পর থেকে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিলেও কেরানীগঞ্জ এখনো শান্ত রয়েছে। এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”
সভায় কেরানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আব্দুল গনি বলেন, “মে দিবস এলেই আমরা শ্রমিকবান্ধব হয়ে উঠি, কিন্তু বছরের বাকি সময় শ্রমিকরা নানা নিপীড়নের শিকার হয়। সেমিনার-আলোচনা সভার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে শ্রমিক কল্যাণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ কাজল মিয়া বলেন, “কেরানীগঞ্জের আগানগর গার্মেন্টস পল্লীর অধিকাংশ বহুতল ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। এতে ছোট অগ্নিকাণ্ড থেকেও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।”
দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা চত্বরে তথ্যচিত্র প্রদর্শন, শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিদের বক্তব্য, ফটোসেশন, রক্তগ্রুপ নির্ণয় এবং নিহত শ্রমিকদের স্মরণে দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। একইসঙ্গে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫ পালন করা হয়, যেখানে কর্মরত শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের জন্য প্রার্থনা করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, শ্রম আইন বাস্তবায়ন ও মালিক-শ্রমিকের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।